২০২৪ সালে ৬৩৯টি দুর্ঘটনায় কর্মক্ষেত্রে ৭৫৮ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সড়ক পরিবহন খাতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে। ২০২৩ সালে কর্মক্ষেত্রে শ্রমিক মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৮৭৫। সে হিসেবে গত বছর কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকের মৃত্যু ১৩.৩৭ শতাংশ কমেছে।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরে সেফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটি (এসআরএস)। সংবাদপত্রে (১৫টি জাতীয় এবং ১১টি স্থানীয়) প্রকাশিত খবরের ওপর ভিত্তি করে সংস্থাটি তথ্য পর্যালোচনা করেছে।
এসআরএস জানিয়েছে, রাস্তাঘাটের গঠন, গাড়ির ফিটনেস, অদক্ষ চালক, অনিয়ন্ত্রিত পরিবহন ব্যবস্থা, আইন প্রয়োগে বাধা, বেপরোয়া যান চলাচলের কারণে পরিবহন খাতে দুর্ঘটনায় শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ বছর সড়ক পরিবহন খাতে ৩৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা মোট মৃত্যুর ৫০.১৩ শতাংশ। সেবা খাতে ৯৬টি দুর্ঘটনায় ১৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা মোট মৃত্যুর ১৭.১৫ শতাংশ। নির্মাণ খাতে ৭১টি দুর্ঘটনায় ৯২ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা মোট মৃত্যুর ১২.১৪ শতাংশ। কৃষি খাতে ৮০টি দুর্ঘটনায় ৮৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা মোট মৃত্যুর ১১.৩৫ শতাংশ।
কর্মক্ষেত্র দুর্ঘটনার জেলাভিত্তিক মৃত্যু পরিসংখ্যানে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ঢাকায়। এই জেলায় ৭১টি দুর্ঘটনায় ৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলায় ৫৩টি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৬২ জনের। ময়মনসিংহে ৫১টি দুর্ঘটনায় ৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত শ্রমিকদের বয়স যাচাই করে দেখা গেছে, কর্মক্ষেত্রে ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের মধ্যে ১৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা বয়সভিত্তিক মৃত্যুর পরিসংখ্যানে সবচেয়ে বেশি। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সীদের মধ্যে ১৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সীদের মধ্যে কর্মক্ষেত্র দুর্ঘটনায় ১০২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এসআরএসের নির্বাহী পরিচালক সেকেন্দার আলী মিনা বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে এ পরিসংখ্যান করা হয়েছে। কর্মক্ষেত্র দুর্ঘটনায় মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি। বড় খবরের ভিড়ে শ্রমিকের অনেক মৃত্যুর ঘটনা পত্রিকায় প্রকাশিত হয় না।
এসআরএস জানিয়েছে, জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ১৪৯ জন শ্রমিক নিহত হয়েছে, তবে এই তথ্য কর্মক্ষেত্র দুর্ঘটনার পরিসংখ্যানে যুক্ত করা হয়নি।
সেকেন্দার আলী মিনা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শ্রমিকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তবে শ্রমিকদের আয় বৈষম্য দূর করে সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না।