ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপ করতে বিএনপি-জামায়াতসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো মধ্যে পারস্পরিক রেষারেষি, অবিশ্বাস ও দলাদলির বদলে একতা ও ঐক্যের ডাক দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা ৮ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্টের মাধ্যমে ঐক্যের ডাক দেন তিনি।
পোস্টে তিনি লেখেন, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপ এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বিচার নিশ্চিতকরণে এই মুহূর্তে ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দলের ঐক্য অপরিহার্য। সুতরাং আমরা পারস্পরিক রেষারেষি, অবিশ্বাস ও দলাদলির বদলে একতা ও ঐক্যের দৃষ্টান্ত কায়েম করব। একই লক্ষ্য বাস্তবায়নে দল-মত নির্বিশেষে আমরা সবাই আগামীতে এক হয়ে কাজ করব। বিভাজন নয়, ঐক্য চাই। ফ্যাসিবাদ বিলোপে ঐক্য চাই।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, বিগত দেড় দশকের আওয়ামী স্বৈরশাসনের জাঁতাকলে নির্মমভাবে পিষ্ট হয়েছে বিএনপি ও জামায়াত। আওয়ামী লীগের অন্যায়, অবিচার ও প্রহসনমূলক অপশাসনের দরুন তারা তাদের বহু সংখ্যক একনিষ্ঠ নেতা-কর্মীকে চিরতরে হারিয়েছে। গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ও মানবাধিকার হরণসহ সব ধরনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার কারণে বিগত দিনগুলিতে দল হিসেবে বিএনপি ও জামায়াতের উপর আওয়ামী লীগ চালিয়েছে নির্মমতম অত্যাচারের খড়গ।
চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের কোনো ঠাঁই নেই। উল্লেখ করে তিনি বলেন, দল হিসেবে যে আওয়ামী লীগ দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের আপামর মানুষের রাজনৈতিক অধিকার খর্ব করে গুম-খুন ও অন্যায়-অবিচারের রাজত্ব কায়েম করেছিল, সেই আওয়ামী লীগের আগামীর ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করার বিন্দুমাত্র সুযোগ অবশিষ্ট নেই। দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধকরণ ও বিগত বছরে আওয়ামী অপশাসনের পেছনে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করেছে তাদের বিচারের দাবিই এখন বাংলাদেশের তামাম জনগণের মুখে-মুখে, অন্তরে-অন্তরে।
হাসনাত বলেন, একটি ব্যাপার আমাদের মনে রাখা দরকার, এত রক্ত বিসর্জনের পরে আমরা কেউই আর ৭১ ও ৯০-এর ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তি চাই না। আমরা যেমন চাই না আমাদের দেশে নতুন করে কেউ ফ্যাসিস্ট হিসেবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠুক, তেমনই চাই না যে আমাদের স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে পুনরায় কোন বহিশক্তির আধিপত্য কায়েম হোক। দেশ ও দেশের জনগণের স্বার্থে এই মহৎ লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমাদের সকলের একতা বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে দল-মত নির্বিশেষে আমরা এক হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যাব একই গন্তব্যের দিকে।