বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল বণ্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে আবারও ডিম দিয়েছে মহাবিপন্ন প্রজাতির একটি বাটাগুর বাসকা কচ্ছপ। এ নিয়ে ৬ষ্ঠ বারের মতো করমজলে ডিম দিলো মহাবিপন্ন প্রজাতির কচ্ছপ বাটাগুর বাসকা। সবগুলো ডিমই প্রাকৃতিক উপায়ে ইনকিউবেশন (বালুর মধ্যে রেখে) বাচ্চা ফুটানো হবে। আগামী ৬০ থেকে ৬৫ দিনের মধ্যে এসব ডিম থেকে বাচ্চা ফুটবে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ। বর্তমানে করমজল প্রজনন কেন্দ্রে ৪৩৬টি মহাবিপন্ন প্রজাতির বাটাগুর বাসকা কচ্ছপ রয়েছে।
সুন্দরবনের করমজল বণ্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার আজাদ কবির জানান, বাটাগুর বাসকা পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে এমনটি মনে করা হলেও ২০০৮ সালে নোয়াখালী ও বরিশালের বিভিন্ন নদ-নদীতে ৮টি বাটাগুর বাসকা পাওয়া যায়। এরপর মহাবিপন্ন প্রজাতির এই ৪টি বাটাগুর বাসকা কচ্ছপ নিয়ে সুন্দরবনে করমজল প্রজনন কেন্দ্রের যাত্রা শুরু হয় ২০১৪ সালে।
মূলত মিহাবিপন্ন প্রজাতির বাটাগুর বাসকা প্রজাতির কচ্ছপের বংশবিস্তার, প্রজনন, খাদ্যাভাস, আচরণ ও বিচরণক্ষেত্রসহ নানা বিষয়ে জানতে গবেষণার জন্যই বন বিভাগের পাশাপাশি এ প্রকল্পের সাথে রয়েছে অস্ট্রিয়ার জুভিয়েনা, আমেরিকার টিএসএ ও ঢাকার প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন।
২০১৭ সাল থেকে প্রতিবছরই করমজল বণ্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে বাটাগুর বাসকা কচ্ছপের ডিম থেকে বাচ্চা জন্ম দেয়া শুরু করে। ২০১৭ সালে এই প্রজনন কেন্দ্রে দুটি বাটাগুর বাসকা কচ্ছপের ৬৩টি ডিম থেকে ৫৭টি বাচ্চা, ২০১৮ সালে দুটি কচ্ছপের ৪৬ ডিম থেকে ২১টি বাচ্চা, ২০১৯ সালে একটি কচ্ছপের ৩২টি ডিম থেকে ৩২টি বাচ্চা, ২০২০ সালের দুটি দুটি কচ্ছপের ৫৬টি ডিম থেকে ৫২টি বাচ্চা ও ২০২১ সালে ৪টি কচ্ছপ মোট ৯৬টি ডিম দেয়, যা থেকে ৭৯টি বাচ্চা জন্ম নেয়। বর্তমানে করমজল বণ্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে ৪৩৬টি বাটাগুর বাসকা কচ্ছপ রয়েছে। মুজিব শতবর্ষে সুন্দরবনের নদীতে ১২টি বাটাগুর বাসকা কচ্ছপ অবমুক্ত করা হয়েছে।
পিএসএন/এমঅাই