ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ২৭ দেশে বসবাসরত অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের বৈধতা দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে। বৈধ কাজের সুযোগ দিয়ে বাংলাদেশ থেকে আরও জনশক্তি নেওয়ারও অনুরোধ জানানো হয়। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশিদের দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা রয়েছে–এরকম ১০টি খাতের কথা উল্লেখ করা হয় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে।
ইইউ–বাংলাদেশ যৌথ সভায় সোমবার বাংলাদেশ এ প্রস্তাব দিয়েছে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে নেতৃত্ব দেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ–ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী। ইইউর পক্ষে নেতৃত্ব দেন এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক পাওলা পাম্পালোনি।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, ইইউভুক্ত দেশগুলোতে বৈধপথে দক্ষ জনশক্তি পাঠানোর জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করছে সরকার। দুইপক্ষের সম্মতিতে রোডম্যাপটি প্রকাশ করা হবে। এতে ১০টি খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির সুযোগের কথা বলা হয়। খাতগুলো হচ্ছে- তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি), কেয়ারগিভিং, নির্মাণশিল্প, ট্যুরিজম ও হসপিটালিটি, কৃষি ও কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত, জাহাজ নির্মাণ ও তৈরি পোশাকশিল্প। ২০২২ সালের এপ্রিলে ‘ইইউ ট্যালেন্ট পার্টনারশিপ প্রোগ্রাম’ ঘোষণা করে। এ কর্মসূচির আওতায় দক্ষ শ্রমিক চায় ইইউ। এর মাধ্যমে ইইউভুক্ত দেশগুলোর বাইরে বাংলাদেশসহ মোট সাতটি দেশ রয়েছে। বৈঠকে এ কর্মসূচির অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠক সূত্র জানায়, অন্যান্য প্রসঙ্গের মধ্যে পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা ‘জিএসপি প্লাস’ নিয়েও আলোচনা হয়। আগামী ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ এলডিসির কাতার থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের পর অতিরিক্ত ৩ বছর বর্তমান স্কিম জিএসপি সুবিধা পাওয়া যাবে। ২০২৯ সাল থেকে ১২ থেকে ১৫ শতাংশ হারে শুল্কারোপ হবে। তখন জিএসপি প্লাস সুবিধার আওতায় প্রায় একই রকম সুবিধা পেতে পারে বাংলাদেশ। তবে এজন্য বাংলাদেশের আর্থিক খাতের সংস্কার, সুশাসন, শ্রম অধিকার, পরিবেশসম্মত উৎপাদন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশ সরকার শ্রম অধিকারের মানসম্পন্ন টেকসই সংস্কার এবং ত্রিপক্ষীয় সম্পর্কের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) কনভেনশনগুলো মেনে চলতে হবে। এই বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা হয়েছে বৈঠকে।