বকেয়া ৮০০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ না করায় বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ ৬০ শতাংশের বেশি কমিয়ে দিয়েছে ভারতের আদানি গ্রুপ। বাংলাদেশের পাওয়ার গ্রিড অপারেটর ও এ সংক্রান্ত আরও দুই সূত্র রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছে।
পূর্ব ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের গোড্ডা প্লান্টের উৎপাদন ক্ষমতা ১৬০০ মেগাওয়াট। এই কেন্দ্র থেকে ঢাকায় বিদ্যুৎ রপ্তানি করা আদানি পাওয়ার। গত আগস্ট মাসে বিদ্যুৎ সরবরাহ ১৪০০ থেকে ১৫০০ থেকে কমিয়ে ৭০০ থেকে ৭৫০ মেগাওয়াটে নামিয়ে আনে। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ সরবরাহ ছিল প্রায় ৫২০ মেগাওয়াট, অর্থাৎ ৬০ শতাংশের বেশি সরবরাহ কমিয়ে আনা হয়।
বাংলাদেশের কাছে আদানির পাওনা প্রায় ১০ হাজার ৮৬ কোটি টাকা। এ ছাড়া দেশের কয়লাভিত্তিক বড় দুই বিদ্যুৎকেন্দ্র এস আলম ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেও উৎপাদন কমেছে।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের তথ্য অনুসারে এবং বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) একজন কর্মকর্তার মতে গত বৃহস্পতিবার সরবরাহ আরও কমিয়ে প্রায় ৫২০ মেগাওয়াটে নামিয়ে আনে আদানি।
অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বৃহস্পতিবার রয়টার্সকে বলেন,
আমরা ধীরে ধীরে বকেয়া পরিশোধ করছি। তারপরও যদি কেউ সরবরাহ বন্ধ করে। তবে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীকে আমাদের জিম্মি করতে দেব না।
বিপিডিবি কর্মকর্তা বলেন, বকেয়া পরিশোধ ত্বরান্বিত করা এবং গত ৭ নভেম্বর আদানি বকেয়া পরিশোধের সময়সীমা তুলে নিলেও বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ ক্রমান্বয়ে কমছে।
রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, বাংলাদেশ আদানির জন্য ১৭০ মিলিয়ন ডলারের ঋণপত্র খুলেছে এবং অর্থ পরিশোধ ত্বরান্বিত করেছে।
আদানি পাওয়ার বিদ্যুৎ সরবরাহ হ্রাস এবং ঢাকার পেমেন্টের বিশদ সম্পর্কে রয়টার্সের প্রশ্নের জবাব দেয়নি।
আদানি পাওয়ারের একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, বকেয়া পরিশোধের বিষয়টি মাথায় রেখে বাংলাদেশ থেকে চাহিদার ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমানো হয়েছে।
গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি না থাকায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ বোর্ড ও আদানি পাওয়ারের কর্মকর্তারা এসব কথা জানিয়েছেন বলে জানায় রয়টার্স।