চরম তাপমাত্রা এবং বন্যার কারণে ২০৩০ সালের মধ্যে এশিয়ার চারটি দেশ তৈরি পোশাক খাতে আয় হারাবে ৬৫০০ কোটি ডলার। একইসঙ্গে উচ্চ তাপত্রামায় কর্মীরা ঠিকমতো কাজ করতে পারবেন না। কারখানা থাকবে বন্ধ। শ্রোডারস এবং কর্নেল ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় বুধবার এ কথা বলা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এতে বলা হয়েছে এ চারটি দেশ হলো বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, পাকিস্তান এবং ভিয়েতনাম। গবেষণায় এই চারটি দেশ থেকে বৈশ্বিক খাতে অজ্ঞাত ৬টি ব্রান্ডের সরবরাহ চেইন আমলে নেয়া হয়েছে। এতে দেখা গেছে এই ৬টি ব্রান্ডের সবটাই বড় রকমের আঘাতপ্রাপ্ত হবে।
গবেষণার এই ফলাফলে থেকে দেখা যায়, তৈরি পোশাক খাত বড় রকমের আর্থিক সংকটের মুখোমুখি হবে। বিনিয়োগকারীদের কোম্পানিতে একটি জাগরণের সতর্কতা হিসেবে কাজ করতে হবে। কর্নেল গ্লোবাল লেবার ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক জেসন জুড বলেন, আমরা যে-সব সরবরাহকারী এবং ক্রেতার সঙ্গে কথা বলেছি, তারা তীব্র গরম এবং বন্যার মতো এ দুটি বিষয়ে দৃষ্টিই দেননি। শিল্পে জলবায়ু বিষয়ক প্রতিক্রিয়া হলো প্রশমন, নির্গমন এবং রিসাইক্লিং করা।
তাপমাত্রা এবং বন্যার ক্ষেত্রে করার মতো তেমন কিছুই নেই অথবা একেবারেই নেই। কোম্পানিগুলোর জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে যেসব ‘ফিজিক্যাল’ ঝুঁকি আছে বৈশ্বিক উষ্ণায়নে সে বিষয়ের গুরুত্ব বোঝা উচিত। এক্ষেত্রে খুব কম কোম্পানিই তার তথ্য প্রকাশ করে। খুব কম বিনিয়োগকারীই যথাযথ ব্যবস্থা নেন।
শ্রোডারসের প্রধান অ্যাঙ্গাস বাউয়ের বলেন, এসব বিষয়ে তেমন ডাটা নেই বললেই চলে। কোনো কোনো তৈরি পোশাকের ব্রান্ড এই তথ্যটি পর্যন্ত প্রকাশ করছে না যে, তাদের কারখানাগুলো কোথায়। তিনি আরও বলেন, কমপক্ষে ৭০,০০০ কোটি পাউন্ডের সম্পদ ব্যবস্থাপনা করে শ্রোডারস। কোম্পানিগুলোর সঙ্গে এসব তথ্য প্রকাশের জন্য আরও বেশি সংযুক্ত হতে পারে তারা। তিনি সরবরাহকারী এবং পলিসি মেকারদের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান, যাতে কর্মীদের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে কৌশল প্রণয়ন করা যায়। আনুমানিকভাবে গবেষকরা ভবিষ্যৎ তাপ ও বন্যা পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করেছেন। তাতে দেখার চেষ্টা করেছেন ‘জলবায়ু অভিযোজিত’ দৃশ্যকল্পে এবং ‘উচ্চ তাপমাত্রা এবং বন্যার’ দৃশ্যকল্পে কি ঘটতে পারে। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে চরম তাপমাত্রায় কর্মীরা বেশি দুর্ভোগ পোহাবেন। এতে শ্রমিকদের উৎপাদনশীলতা কমে আসবে বৈশ্বিক তাপ ও আর্দ্রতা বৃদ্ধির ফলে।
বন্যার কারণে চারটি দেশ কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হবে। এ চারটি দেশ বিশ্বের মোট তৈরি পোশাকের শতকরা ১৮ ভাগ সরবরাহ দেয়। তৈরি পোশাক এবং পাদুকা কারখানায় কাজ করেন এক কোটি ৬ লাখ শ্রমিক। গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০২৫ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে উৎপাদনশীলতা কমে যাবে ৬৫০০ কোটি ডলার। যা শতকরা ২২ ভাগ অবনতির সমান। কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি হবে ৯ লাখ ৫০ হাজারে কম। ২০৫০ সাল নাগাদ হারানো রপ্তানি আয় দাঁড়াবে শতকরা ৬৮.৬ ভাগ। সৃষ্টি হবে ৮৬ লাখ ৪০ হাজারেরও কম কর্মক্ষেত্র।
পিএসএন/এমঅাই