যমুনা নদীতে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর গার্ডারসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নিয়ে মোংলা সমুদ্র বন্দরের ৭ নম্বর জেটিতে নঙ্গর করেছে বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ এমভি মারস্। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে বন্দরের জেটিতে পৌঁছেই পণ্য খালাস শুরু করে পানামা পতাকাবাহী এ জাহাজটি। এটি বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর লোহার গার্ডার, পাইপসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশের এ আমদানিকারকের ৭ম চালান। জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট ও বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার বিভাগ এই তথ্য জানায়।
এমভি মারস্ স্থানীয় শিপিং এজেন্ট হক এ্যান্ড সন্স লিমিটেডের খুলনাস্থ অপারেশ ম্যানেজার (শিপিং বিভাগ) শওকত আলী জানান, পানামা পতাকাবাহী জাহাজ এমভি মারক্স গত ১৬ জানুয়ারি ভিয়েতনামের হাইফং বন্দর থেকে সরাসরি মোংলা বন্দরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। এরপর ২৭ জানুয়ারি শুক্রবার বিকেল তিনটার দিকে মোংলা বন্দরের ৭ নম্বর জেটিতে ভেড়ে। জাহাজটিতে বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতুর ১৯৩ প্যাকেজে ১ হাজার ৫১৯ মেঃ টন যন্ত্রাংশসহ বিভিন্ন মালামাল রয়েছে। জাহাজটি বন্দর জেটিতে ভেড়ার পর দুপুরের পালা থেকেই মেশিনারি পণ্য খালাস শুরু করা হয়। সেতুর খালাসকৃত পণ্যগুলো বার্জে নামানে হচ্ছে, পরে সেগুলো নদীপথে সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীতে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর কাছে পৌঁছাবে। তিনি আরো বলেন, জাহাজটি মোংলা বন্দরে নঙ্গরের পর ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই জাহাজ থেকে মেশিনারি পণ্য খালাস করা সম্পন্ন হবে আশা করছি।
মেশিনারির পণ্য খালাসকারী শ্রমিক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স বি এন্ড এম রহমান কোম্পানি লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ নুরুল ইসলাম জানান, মোংলা বন্দরে যতগুলো মেশিনারিজ পণ্যবাহী জাহাজ মোংলা বন্দরে খালাস হয়েছে তার ৬০ ভাগ এ প্রতিষ্ঠান খালাস করেছে। মোংলা বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীদের মালামাল পরিবহন করতে নৌপথ ও সড়ক পথে কোন জানজট না থাকায় নির্বিঘ্নে পণ্য আনা-নেয়া করতে পারছে।
মোংলা বন্দরের হারবার বিভাগ জানায়, দেশের চলমান মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম যমুনা নদীতে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু। যেটির বাস্তবায়ন এখন দৃশ্যমান। এরই মধ্যে মেট্রোরেলের ১৪টি জাহাজে ১৩৮টি কোচ ও ইঞ্জিন নিয়ে মোংলা বন্দরে খালাস হয়েছে। এছাড়া মেট্রোরেল, রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে, রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল ও রেল সেতুর মেশিনারি পণ্যের চালান মোংলা বন্দর দিয়ে আমদানি হওয়ায় এ বন্দরের যে সক্ষমতা বেড়েছে তার এটি একটি দৃশ্য। সরকারের মেঘা প্রকল্পের অধিকাংশ পণ্য মোংলা বন্দর দিয়ে খালাস হওয়ার চলমান থাকবে বলে জানায় বন্দরের এ কর্মকর্তা।