নগরীর দৌলতপুর থানাধীন মহেশ^রপাশা কালীবাড়ী বাজারের একটি জুয়েলারি দোকানে গত ২৮ অক্টোবর দিনে-দুপুরে ফিল্মি স্টাইলে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া নাজিম উদ্দীন (৪৫) কে দুই দিন রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শুক্রবার সকালে থানা পুলিশ আদালতে সোপর্দ করেছে। পুলিশ বলছে, তাকে জিজ্ঞাসাবাদে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই চলছে। তবে, তাকে নিয়ে অভিযান পরিচালনার জন্য আরও সাত দিন পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
রাজধানী ঢাকার মিরপুর থানাধীন নবাবেরবাগ শাহআলী এলাকার বাসিন্দা নাজিমকে সকাল ১০ টার পরে রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতে সোপর্দ করা হয়। এরপর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ ফরিদুজ্জামান তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। একই সাথে আগামী রোববার রিমান্ড শুনানির জন্য তিনি দিন ধার্য্য করেন। আদালতের এক কর্মকর্তা দৈনিক জন্মভূমিকে এ তথ্য জানান।
গত সোমবার দুপুর একটার দিকে একটি মাইক্রোবাসযোগে চালকসহ পাঁচ জন ওই বাজারের দত্ত জুয়েলার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সামনে অবস্থান নেয়। গাড়ীতে চালক বসে থাকলেও চার জন আগ্নেয়াস্ত্র এবং ধাঁরালো অস্ত্র নিয়ে দোকানে ঢুকে বিক্রেতাকে জিম্মি করে। এরপর ক্যাশ বাক্স থেকে নগদ দুই লাখ টাকা এবং ১৬ টি জুয়েলারি বক্স লুটে নেয়। তখন তিন জন মালামালসহ আগে বেরিয়ে গেলেও একজন পেছনে পড়ে। দোকানি উত্তম দত্ত তাকে জাপটে ধরে। এরপর সে ওই দোকানিকে লক্ষ্য করে গুলি করে সেখান থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল হতে দুই রাউণ্ড পিস্তলের গুলির খোসা জব্দ করেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আসামি নাজিমের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত চার/পাঁচ জনের বিরুদ্ধে ডাকাতি ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ এ তথ্য জানিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাজারে অবস্থানরত কয়েকজন ডাকাত দলের মাইক্রোবাসের গতিরোধ করার চেষ্টা করেন। তখন দুবৃত্বরা ৬-৭ টি ককটেল ছুড়ে মারে। এর বিস্ফোরনে রাজ্জাক (৪৫), রাজা মিয়া (৫০), শহিদুল (৪৫) এবং রাজিব (৩০) নামে চার জন সামান্য জখম হন। তারা স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ী ফেরেন।
পুলিশ জানায়, ডাকাতির পর ফুলতলা উপজেলার পুথিয়াবান্দা এলাকা হতে পুলিশ নাজিমকে একটি মাইক্রোবাসসহ গ্রেফতার করে। তার হেফাজত হতে ১২ গ্রাম স্বর্ণালংকার, একটি চাপাতি, ১৬ টি অলংকার রাখার ট্রে ওএবং নগদ চার হাজার ২শ’ ৪৫ টাকা উদ্ধার হয়েছিল।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) ইন্সপেক্টর শহিদুল ইসলাম দৈনিক জন্মভূমিকে বলেন, দুই দিন পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদকালে নাজিম অজ্ঞাত পলাতক আসামিদের ব্যাপারে তথ্য দিয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এ ব্যাপারে আর কোনো কথা বলতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেছেন। রিমন্ডে তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করার পাশাপাশি ডাকাত দলের অন্য সদস্যদের গ্রেফতার, অস্ত্র ও লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধারের জন্য অভিযান চলছে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
Leave a comment