আজ ০৯ জুন ২০২৪ খ্রিঃ, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ রবিবার বিকাল ০৪:৩০ ঘটিকায় কেএমপি’র সদরদপ্তরস্থ সম্মেলন কক্ষে পুলিশ কমিশনার জনাব মোঃ মোজাম্মেল হক, বিপিএম (বার), পিপিএম-সেবা মহোদয়ের সভাপতিত্বে আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল আযহা ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে সার্বিক নিরাপত্তা ও আইন শৃঙ্খলা সংক্রান্তে খুলনা মহনগরীর ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, খুলনাস্থ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধি, পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট, গোয়েন্দা সংস্থা, খুলনা জেলা প্রশাসন ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন, বিএসটিআই, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ, ওজোপাডিকো, ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধিবৃন্দের সাথে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার মতবিনিম সভার শুরুতে সকলকে সালাম ও শুভেচ্ছা জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি বলেন, আসন্ন ঈদ উপলক্ষ্যে অসাধু ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফা লাভের আশায় যাতে বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাজার পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে তুলতে না পারে সেজন্য দ্রব্য মূল্য সহনশীল রাখতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। ভেজাল পণ্য বিক্রয় ও সরবরাহ হতে বিরত থাকতে হবে। পাশাপাশি কোরবানির পশুর চামড়া পাচার এবং নাম মাত্র মূল্যে ক্রয়-বিক্রয়ের সিন্ডিকেট না করতে পারে সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। ঈদকে কেন্দ্র করে ভোজ্য তেল, মসলার দাম যাতে বৃদ্ধি করতে না পারে সেজন্য গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অন্যান্য সংস্থার সাথে সমন্বয় করে অভিযান পরিচালনা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। কোরবানির পশুবাহী গাড়ি মহাসড়কে যাতে অযথা হয়রানির শিকার না হয় সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশ প্রদান করেন। এরপর পুলিশ কমিশনার মহোদয় মতবিনিময় সভায় আগত প্রতিনিধিবৃন্দের বক্তব্য অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করেন এবং করণীয় সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট অফিসারকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন।
উক্ত মতবিনিময় সভায় উন্মুক্ত আলোচনা শেষে পুলিশ কমিশনার মহোদয় কর্তৃক আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল আযহা উপলক্ষে কোরবানির পশু পরিবহন ও হাটের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ও দ্রব্য মূল্য সহনশীল রাখার জন্য নিম্নোক্ত নির্দেশনা প্রদান করা হয়ঃ-
সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রয় করা এবং ভেজাল পণ্য বিক্রয় ও সরবরাহ হতে বিরত থাকা।
অবৈধভাবে পণ্য মজুদ করে বাজার সিন্ডিকেট না করা।
সরকার নির্ধারিত মূল্যে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করতে হবে।
প্রতিটি বাজার, মার্কেট ও দোকানে পর্যাপ্ত অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিটি
মার্কেট ও দোকানে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।
সড়ক-মহাসড়ক, রেল লাইন বা সংলগ্ন এলাকায় পশুর হাট না বসিয়ে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে
পশুর হাট বসাতে হবে।
নিরাপত্তার স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ কোরবানির পশুর হাটে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করতে হবে।
কোরবানির পশু বহনকারী গাড়িতে হাটের নাম উল্লেখপূর্বক ব্যানার টানানোর ব্যবস্থা করা এবং এক হাটের
পশুবাহী গাড়ি অন্য হাটে জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়া বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
কোরবানির পশু বহনকারী যানবাহনসহ অন্যান্য যানবাহন কোন সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া না থামানো বা চেকিং
করা যাবে না এবং মহাসড়কে কোরবানির পশুবাহী গাড়ি থামিয়ে পশু ছিনতাই/চাঁদাবাজী রোধকল্পে
প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
কৌশলগত স্থানে পুলিশ চেকপোস্ট স্থাপন ও এলাকা ভিত্তিক পুলিশ টহল জোরদার করতে হবে।
ঈদ উপলক্ষে জাল টাকার বিস্তার প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টি, শয়তানের নিঃশ্বাস চক্র ও ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন
করতে হবে।
ঈদের দিন অস্থায়ী চামড়া ক্রয় কেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।
চামড়া পাচার রোধে চেকপোস্ট বসিয়ে চামড়া পরিবহন ট্যানারীমুখী রাখতে হবে।
কোরবানীর বর্জ্য দ্রুত অপসারণের জন্য সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে।
হাট ইজারাদার কর্তৃক নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় জালনোট সনাক্তকরণ মেশিন স্থাপন ও নগদ লেনদেনের ঝুঁকি রোধে
ব্যাংকিং বুথ স্থাপন/সন্ধ্যাকালীন ব্যাংকিং ব্যবস্থা রাখার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করেন।
পশুর হাট নির্ধারিত সীমানার বাইরে রাস্তা পর্যন্ত বর্ধিত হয়ে যেন যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি না করে সেদিকে
লক্ষ্য রাখতে হবে।
ভেটেরেনারি সার্জনের মোবাইল নম্বর হাটের দৃশ্যমান স্থানে ঝুলিয়ে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কেএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এ্যাডমিন এন্ড ফিন্যান্স) জনাব সরদার রকিবুল ইসলাম, বিপিএম-সেবা; ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (উত্তর) অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত জনাব মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন; ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (সদর)অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত জনাব মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন; বিশেষ পুলিশ সুপার (সিটিএসবি) অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত জনাব রাশিদা বেগম, পিপিএম-সেবা; ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ডিবি) অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত জনাব বি.এম নুরুজ্জামান, বিপিএম; ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) জনাব মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, বিপিএম-সেবা; ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) জনাব মনিরা সুলতানা, বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ-সহ খুলনা মহনগরীর ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, খুলনাস্থ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধি, পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট, গোয়েন্দা সংস্থা, খুলনা জেলা প্রশাসন ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন, বিএসটিআই, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ, ওজোপাডিকো, ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধিবৃন্দে এবং সাংবাদিকবৃন্দ।