অনেক সময় আমাদের জীবনে এমন পরিস্থিতি আসে, যখন নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। হয়তো তা হতাশা, রাগ, উদ্বেগ বা অতিরিক্ত চাহিদার কারণে হতে পারে। তবে কিছু সহজ উপায় রয়েছে, যা অনুসরণ করলে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা এবং মানসিক স্থিরতা বজায় রাখা সম্ভব। নিচে এমন কিছু কৌশল তুলে ধরা হলো।
গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস নিন : প্রতিবার যখন মনে হবে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে, তখন গভীর শ্বাস নিন। ধীরে ধীরে এবং গভীরভাবে শ্বাস নেওয়া আপনার মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ করে এবং তা আপনার নার্ভ সিস্টেমকে শান্ত করতে সাহায্য করে। এটি মানসিক প্রশান্তি এনে দিতে পারে।
সময় দিন : নিজেকে সময় দিন।
যখন আপনার ভেতরে উদ্বেগ বা রাগ প্রবল হয়ে ওঠে, তখন প্রতিক্রিয়া জানানোর আগে কয়েক সেকেন্ড অপেক্ষা করুন। এটি আপনার আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য মূল্যবান সময় দেবে।
অন্য কিছুতে মনোযোগ দিন : কোনো নেতিবাচক আবেগ বা চিন্তা যখন আপনাকে গ্রাস করতে চায়, তখন মনোযোগ অন্য কিছুতে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন। একটি ভালো বই পড়া, প্রিয় গান শোনা, বা সামান্য হাঁটাহাঁটি করা এই অবস্থায় কার্যকরী হতে পারে।
ইতিবাচক কথা বলুন : নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে নিজের সঙ্গে ইতিবাচক কথা বলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিজের জন্য প্রেরণামূলক কথা বলুন, যেমন : ‘আমি পারব’, ‘এই পরিস্থিতি সাময়িক, এটি কেটে যাবে’। নিজের সঙ্গে ইতিবাচক যোগাযোগ আপনাকে মানসিকভাবে শক্তিশালী করে তুলবে।
মেডিটেশন এবং যোগব্যায়াম : মেডিটেশন এবং যোগব্যায়াম আপনাকে মানসিক এবং শারীরিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়তা করে। নিয়মিত মেডিটেশন করলে মনকে প্রশান্ত রাখা সহজ হয় এবং তা আত্মনিয়ন্ত্রণ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে।
পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রাম : পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাব মানসিক চাপ বাড়াতে পারে এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। সুতরাং নিয়মিত পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন এবং কাজের মাঝে বিশ্রাম নিন।বন্ধু বা প্রিয়জনের সঙ্গে কথা বলুন : আপনার কোনো সমস্যা বা চিন্তা শেয়ার করার জন্য প্রিয়জনের সঙ্গে কথা বলুন। কখনো কখনো অন্যের সমর্থন ও পরামর্শ আমাদের নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করতে পারে।
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন : স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং শারীরিক কসরত করা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই জরুরি। শরীর সুস্থ থাকলে মনও সুস্থ থাকে। এটি মানসিক চাপ কমিয়ে আত্মনিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা বাড়ায়।নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন মনে হলেও ওপরের এই পদ্ধতিগুলো চেষ্টা করলে আপনার দৈনন্দিন জীবনে আত্মনিয়ন্ত্রণের উন্নতি হবে। সময়মতো নিজের আবেগ ও চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে আপনি মানসিকভাবে আরো শক্তিশালী এবং স্থিতিশীল হবেন।