পোশাক মানুষের সৌন্দর্য বাড়ায়, ব্যক্তিত্বের প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তোলে। সৌন্দর্য ছাড়াও পোশাকে শরীর ঢাকা মানুষের স্বভাবজাত একটি বিষয়। হজরত আদম আলাইহিস সাল্লাম ও হাওয়া আলাইহাস সাল্লামের শরীর থেকে জান্নাতের পোশাক খুলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা গাছের পাতা দিয়ে শরীর ঢেকে ফেলেছিলেন। স্বভাবজাত প্রয়োজনের তাগিদেই মানুষ পোশাক পড়ে।
কাপড় পুরাতন হলে নতুন কাপড়ের কেনে মানুষ। এছাড়াও ঈদ-আনন্দ-উৎসবে নতুন কাপড় কেনা ও পরার ধূম পড়ে সবার মাঝে। নতুন কাপড় মনে আনন্দ বয়ে যায়। মুমিন ব্যক্তি মাত্রই আনন্দের মুহুর্তে আল্লাহকে স্মরণ করেন, তার নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করে এ বিষয়ে ইসলামী বিধি-বিধান জানতে আগ্রহী হন। হালাল-হারাম, বৈধতা-অবৈধতা যাচাই করতে চান।
নতুন পোশাকের বিষয়ে অনেকে প্রশ্ন করেন, আমরা অনেক সময় বাজার থেকে নতুন কাপড় কিনে এনে না ধুয়ে পরিধান করি এবং তা পরে নামাজও পড়ি। কিন্তু মনে খটকা লাগে, এই নতুন কাপড় সুতা থেকে শুরু করে পূর্ণ কাপড় হওয়া পর্যন্ত অনেক পর্যায় অতিক্রম করতে হয়। সেখানে হয়তোবা পবিত্রতা-অপবিত্রতার প্রতি খেয়াল রাখা হয় না। এতে সন্দেহ হয় এই কাপড় পবিত্র নাকি অপবিত্র। তাই জানার বিষয় হলো, নতুন কাপড় না ধুয়ে তা পরিধান করে নামাজ পড়া সহিহ হবে কি?
এ বিষয়ে ইসলামী আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদদের মতামত হলো, এ ধরনের পরিধেয় বস্ত্র নতুন হলেও নাপাক হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত না হলে তা পবিত্র হিসেবে ধরা হবে। শুধুমাত্র সন্দেহ বা মনের ধারণার ভিত্তিতে তা নাপাক বলা যাবে না।
নতুন কাপড়ে যেহেতু নাপাক লাগার কোনো আলামত পাওয়া যায় না, তাই মূলত তা পবিত্র। হ্যাঁ, তবে কোনো কাপড়ে নাপাকি লাগার বিষয়টি নিশ্চিত হলে কিংবা প্রবল ধারণা হলে তা অপবিত্র বলে ধরা হবে।
আলেমরা বলেন, ইলমে ফিকহের একটি প্রসিদ্ধ মূলনীতি হলো-
الأصل في الأشياء الطهارة
‘বস্তুর মূল হলো- পবিত্র হওয়া।’ এ দৃষ্টিকোন থেকে নতুন কাপড়কে পবিত্র হিসাবেই ধরা হবে এবং তা পরে নামাজ আদায় করা যাবে। শুধু নাপাকি থাকা না থাকার সন্দেহের ওপর ভিত্তি করে নতুন কাপড়কে নাপাক ধরা হবে না।
অতএব, ফুকাহায়ে কেরামের মতে, নতুন কাপড় না ধুয়ে পরিধান করা ও তা গায়ে দিয়ে নামাজ পড়া জায়েজ। তবে মনের খটকা দূর করতে নতুন কাপড় ধুয়ে পরাই ভালো। -(মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা : ৪/৩৬২)
পিএসএন/এমঅাই