খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে স্বতন্ত্র তিন মেয়র ও দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল আদেশ বহাল রেখেছেন আপীল বোর্ড। গতকাল মঙ্গলবার শুনানী শেষে মেয়র প্রার্থী এস এম মুশফিকুর রহমান, মোঃ আবদুলাহ চৌধুরী ও কামরুল ইসলামের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। মঙ্গলবার ৮ জন প্রার্থীর আপিল শুনানি করেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মোঃ জিলুর রহমান চৌধুরী।
অন্যদিকে, শুনানীর পূর্বনির্ধারিত সময়ের পূর্বেই ১৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মোঃ ইউসুফ আলী খানের বাতিল ঘোষিত মনোনয়নপত্র পুনর্বহাল করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন একাধিক সূত্র।
অন্যদিকে, নগরীর ২৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শমসের আলী মিন্টুর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করায় ওই ওয়ার্ডে একক প্রার্থী রয়েছেন জেড এ মাহমুদ ডন। তবে বর্তমান কাউন্সিলর শমসের আলী মিন্টু এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আইনী লড়াইয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন। এছাড়া ১৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী সৈয়দ হুমায়ুন কবিরের প্রার্থীতাও বাতিল করেছে আপীল বোর্ড।
গতকাল আপীল শুনানিতে প্রার্থীতা ফিরে পেয়েছেন জাকের পার্টির মেয়র প্রার্থী এস এম সাব্বির হোসেন এবং ১৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মোঃ ইউসুফ আলী খান ও ১৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মোঃ জাকির হোসেন।
জানা গেছে, ১৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আ’লীগ নেতা ইউসুফ আলী খানের বিরুদ্ধে হলফমানায় ব্যাংকের ঋণখেলাপীর তথ্য গোপন করার অভিযোগে যাচাই-বাছাই পর্বে মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন রিটার্নি কর্মকর্তা মোঃ আলাউদ্দিন। তবে বাতিলের বিরুদ্ধে আপীল করায় গতকাল বিকেল পৌনে ৩টায় তার শুনানীর সময় নির্ধারিত ছিল। তবে দুপুর একটার দিকে তার শুনানী গ্রহণ ও মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয় বলে জানা গেছে।
এদিকে, ১০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী কাজী তালাত হোসেন কাউট হলফনামায় তথ্য গোপন করেছেন, এমন অভিযোগ তুলে তার প্রার্থীতার বৈধতার বিরুদ্ধে আপিল করেও পরে তা প্রত্যাহার করেছেন অপর কাউন্সিলর প্রার্থী শরিফুল ইসলাম।
অন্যদিকে গতকাল বিকেলেই উচ্চ আদালতে আপীল করতে খুলনা ত্যাগ করেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী এস এম মুশফিকুর রহমান। তিনি জানিয়েছেন, রির্টানিং কর্মকর্তার আপীল বোর্ডের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আইনী সহায়তা চাইবেন তিনি।
জাকের পার্টির মেয়র প্রার্থী এস এম সাব্বির হোসেন বলেন, আশা ছিল, প্রার্থিতা ফিরে পাব। এখন প্রচারের প্রস্তুতি শুরু করবো।
সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ মে কেসিসি নির্বাচনে মেয়র পদে ৭ জন, সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৩৯ জন ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৯ জনসহ মোট ১৯৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। গত ১৮ মে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে চার মেয়র প্রার্থীসহ ১৮ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ আলাউদ্দীন। গত ২১ মে পর্যন্ত ১৮ জন প্রার্থীর মধ্যে ১৫ জন প্রার্থীতা ফিরে পেতে আপিল করেন। গত দু’দিনে ১৫ জনের আপিলের শুনানি শেষে প্রার্থীতা ফিরে পেয়েছেন একজন মেয়র প্রার্থীসহ ৭ জন। আর তিনজন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীসহ ৮ জনের বাতিল হয়েছে। আপিলে ৭ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হওয়ায় মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ৪ জন মেয়র প্রার্থী, ৩৯ জন সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী ও ১৪১ জন সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীসহ মোট ১৮৪ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ রয়েছে।
খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) ও স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, আপিল শুনানির দুই দিনে মেয়র পদে এক প্রার্থীসহ ৭ জনের আপিল মঞ্জুর হয়েছে। আর ৮জনের আপিল নামঞ্জুর করা হয়েছে। একজনের বৈধতার বিরুদ্ধে আপিল করেও আজ তা প্রত্যাহার করেছে। আপিলে যাদের মনোনয়ন নামঞ্জুর হয়েছে, তারা হাইকোর্টে আপিল করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।