আবারও বিতর্কের মুখে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। মাসখানেক আগে অনুষ্ঠিত হওয়া এই নির্বাচন নিয়ে নতুন করে প্রশ্নের সৃষ্টি করেছেন পরাজিত সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। ইতোমধ্যেই ভোটের ফল স্থগিত চেয়ে আদালতে রিট করেছেন তিনি।
গত বুধবার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চে আইনজীবী অ্যাডভোকেট পলাশ চন্দ্র রায়ের মাধ্যমে রিট করেন এই নায়িকা। নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে এই ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে। পাশাপাশি নতুন করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
ফল স্থগিত চেয়ে নির্বাচন নিয়ে একাধিক অভিযোগ এনেছেন নিপুণ। আক্রমণ করে কথা বলেছেন নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন ডিপজলকেও। অভিনেত্রী বলেছেন, আদালতেই নির্বাচিত কমিটিকে মোকাবেলা করবেন তিনি।
এরপরই বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। নিপুণের বক্তব্যের জবাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন মিশা-ডিপজল প্যানেল। যেখানে শিল্পী সমিতির সহ-সভাপতি চিত্রনায়ক ডিএ তায়েব জানান, নিপুণের সদস্য পদ বাতিল হতে পারে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) শিল্পী সমিতির কার্যকরী সভা শেষে সংগঠনের পক্ষ থেকে তায়েব বলেন, গণমাধ্যমে সাধারণ সম্পাদক ডিপজলকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেছেন নিপুণ। তার সদস্যপদ কেন বাতিল করা হবে না, সেটি জানতে চেয়ে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্তমান কমিটি। পাশাপাশি নিপুণকে নিয়েও বেশ কিছু মন্তব্য করেন তিনি।
যা ভালোভাবে নেননি এই চিত্রনায়িকা। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন নিপুণ। সেখান থেকে এই অভিনেত্রী বলেন, ডিএ তায়েবের মতো একদমই ফ্রি লোক না আমি। তিনি কি অভিনেতা, একজন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা, তার কোনো সিনেমা ব্লকবাস্টার? তিনি কি বাংলাদেশি চলচ্চিত্র অঙ্গনে নিজের নাম নক্ষত্রের সঙ্গে লিখেছেন- তার কাছে আমার প্রশ্ন রইল।
এরপর ডি এ তায়েবের বিরুদ্ধে মামলার হুমকি দিয়ে নিপুণ বলেন, ‘তিনি আমাকে নিয়ে যেটি বলেছেন, আমার মানসিক সমস্যা রয়েছে। সেটার জন্য আমি দেশে আসার পর তার নামে সাইবার ক্রাইমে মামলা করব।’
সদস্য পদ বাতিল প্রসঙ্গে এই নায়িকা বলেন, ‘সদস্যপদের সঙ্গে কোর্টের কোনো সম্পর্ক নেই। রিট যেহেতু করেছি, ওনাদের কোর্টে আসতেই হবে। আর তিনি যদি সদস্যপদ খারিজ করতেই চায়, তাহলে সেটার জন্যও কোর্ট রয়েছে। দেশে তো আইন রয়েছে।’
এদিকে রিট দায়েরের পর নিপুণকে নিয়ে অভিনেতা ডিপজল বলেন, ‘কেস খেলবা, আসো। যেটা খেলার মন চায় সেটাই খেলো। আমরা ভদ্রতা ও নম্রতা চাই। আমরা চাই কীভাবে চলচ্চিত্র এগিয়ে নেওয়া যায়, সেদিকে কাজ করার। কোনো ঝামেলা চাই না।’
এর আগে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসা নিয়েও দ্বন্দ্বে জড়ান নিপুণ এবং চিত্রনায়ক জায়েদ খান। একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের পর মামলা গড়ায় আদালত পর্যন্ত। এবারের নির্বাচন নিয়েও নতুন কমিটির সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন এই নায়িকা। দেখা যাক, এবারের জল কোন পর্যন্ত গড়ায়।