জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবে আবারও ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার (২০ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত এই ভোটে পরিষদের অন্যান্য সদস্যদের সমালোচনা করে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, প্রস্তাবটি নিয়ে আপসের প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করা হয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।১৫ সদস্যবিশিষ্ট পরিষদে ১০টি অস্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব তোলা হয়। এতে গাজায় অবিলম্বে, নিঃশর্ত ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয় এবং পাশাপাশি জিম্মিদের মুক্তিও দাবি করা হয়।তবে যুক্তরাষ্ট্র একমাত্র স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে ভেটোর মাধ্যমে প্রস্তাবটি আটকে দেয়।ভোটের আগে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্র এমন কোনও প্রস্তাব সমর্থন করবে না যেটিতে যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে জিম্মিদের তাৎক্ষণিক মুক্তির বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি।তিনি বলেন, আমরা আগেও বলেছি যে, নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির কোনও প্রস্তাব, যাতে জিম্মিদের মুক্তির আহ্বান জানানো হয়নি, তা সমর্থন করা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভব নয়।২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস নেতৃত্বাধীন যোদ্ধারা ইসরায়েলে আক্রমণ চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে এবং ২৫০ জনেরও বেশি মানুষকে জিম্মি করে। এর জবাবে ইসরায়েল গাজায় ১৩ মাস ধরে সামরিক অভিযান চালিয়ে আসছে। এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৪ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। পুরো উপত্যকার প্রায় সব বাসিন্দাকে অন্তত একবার স্থানচ্যুত হতে বাধ্য করেছে।ভোটের আগে যুক্তরাজ্য একটি আপস প্রস্তাব উত্থাপন করেছিল। তবে সেটি প্রত্যাখ্যাত হয়।মার্কিন ওই কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন যে, পরিষদের ১০টি অস্থায়ী সদস্যের মধ্যে কিছু রাষ্ট্র প্রস্তাবটিতে আপসের পরিবর্তে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছিল। রাশিয়া ও চীন এই প্রক্রিয়ায় প্রভাব বিস্তার করেছে বলে অভিযোগ ওঠে।তিনি বলেন, চীন কঠোর ভাষার দাবি জানাচ্ছিল এবং রাশিয়া বিভিন্ন অস্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রকে তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী পরিচালনা করছিল। এটি স্পষ্টভাবে দেখিয়ে দিচ্ছে যে, এটি অস্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রগুলোর স্বাধীন ইচ্ছার প্রতিফলন ছিল না। বরং, প্রক্রিয়াটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে পরিচালিত হয়েছে।গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের এই ভেটোকে সংকট সমাধানের পথে বড় বাধা হিসেবে দেখা হচ্ছে। এতে পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে মতবিরোধ আরও গভীর হয়েছে।
Leave a comment