বরাবরই সাহসী নিয়ে। যেমন মুখের কথায় তেমনি পোশাক ও চলাফেরায়। প্রথা ভাঙেন, নিজের মতো করে চলবেন বলে। অভিনয়ে তিনি জাদু ছড়াতে পারেন। মোহনীয় কণ্ঠ তার মধুর বৃষ্টি হয়ে ঝরে। তিনি পাওলি দাম। কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী।
২০১১ সালে মুক্তি পেয়েছিল টালিউড সিনেমা ‘ছত্রাক’। ভিমুক্তি জয়সুন্দর পরিচালিত এই সিনেমা প্রদর্শিত হয়েছিল কান ফেস্টিভ্যালেও। বিভিন্ন মহলে প্রশংসা পেলেও তুমুল বিতর্কেও পড়েছিল সিনেমাটি। কারণ এতে পুরোপুরি নগ্ন হয়েছিলেন অভিনেত্রী পাওলি দাম। বাংলা সিনেমার ক্ষেত্রে ওই দৃশ্য ছিল অত্যন্ত সাহসী পদক্ষেপ।
সম্প্রতি আনন্দবাজারে দেয়া সাক্ষাৎকারে এই প্রসঙ্গ উঠলে তিনি বলেন, ‘গল্পের প্রয়োজনে বারবার এমন চরিত্র করবেন তিনি। নগ্ন হতেও তার আপত্তি নেই।’
পাওলি দাম বলেন, ‘যদি বুঝি, সেই চরিত্রটি জন্য আমার মন, আত্মা এবং শরীর একই জায়গায় এসে মিলেছে, তবে অবশ্যই করব। যে কোনো চরিত্রের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ। নিজেকে নিজের কাছে এবং ওই চরিত্রের কাছে সমর্পণ করে দিই আমি। যদি সেরকম চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ আসে, যেখানে এসব কিছু ঘটবে, তা হলে নগ্নতা নিয়ে কোনো অসুবিধা নেই।’
১৯৯২ সালের ছবি, ‘ড্যামেজ’। ব্রিটিশ পরিচালক লুই মাল একই শিরোনামের একটি উপন্যাস থেকে গল্পটি নিয়েছিলেন। নগ্নতা, অন্তরঙ্গতা, কামনা, শরীরী সম্পর্ক- এই সব কিছুই যে ভীষণ বাস্তব, তা তিনি পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছিলেন। এই ধরনের বিভিন্ন ছবি দেখার অভ্যাস ছোট থেকেই তৈরি হয়েছিল পাওলি দামের। খুব অল্প বয়সেই বিশ্ব চলচ্চিত্রের সঙ্গে আলাপ তার। চলচ্চিত্রের অর্থ খুঁজে পেয়েছিলেন তিনি। তাই ‘ছত্রাক’-এ অভিনয় করার সময়ে সেই চরিত্রটি তিনি আর পাঁচটি চরিত্রের মতোই দেখেছিলেন। সেভাবেই ‘ছত্রাক’ ছবিতে চরিত্রের কাছে নিজেকে সমর্পণ করেছিলেন।
পাওলি জানান, ছোট থেকে পাশ্চাত্যের ছবি দেখতে দেখতে পর্দায় নগ্নতা দেখা বা দেখানো নিয়ে কোনো নাক সিঁটকানো ছিল না তার। ‘টাইটানিক’-এর মতো জনপ্রিয় হলিউড ছবিতেও খুব সহজে নগ্নতাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। তাই ‘ছত্রাক’-এর একটি অন্তরঙ্গ দৃশ্য মুক্তি পাওয়ার পরে তার নগ্ন হওয়া নিয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া শুনে অবাক হয়েছিলেন পাওলি। তিনি ভাবতেই পারেননি যে দর্শক ছবিটি নিয়ে নয়, কেবল তার নগ্ন হওয়া নিয়ে কথা বলবেন!
‘অনেকেই হয়তো ভালবাসেন বিতর্ক। কিন্তু আমি সে রকম নই। বিতর্ক উপভোগ করি না। আমার মতে, সর্ব ক্ষণ খারাপ কথা বলার কী দরকার? ভাল কথাও তো বলতে পারি।’- যোগ করেন পাওলি।