খুলনা প্রত্যন্ত গ্রামে ৫০ বছরের বয়সী এক ব্যক্তির লালসার শিকার হয়েছে ৬ বছরের শিশু। বিস্কুট খাওয়ার লোভ দেখিয়ে শিশুটিকে নিজ ঘরে ডেকে নিয়ে চালানো হয় পাশবিক নির্যাতন। এ নিয়ে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।
ধরা পড়েছে একমাত্র আসামী হারুণ মিনা। শিশুটিকে চিকিৎসা চলছে। একই সাথে চলছে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা। এলাকাবাসী জানায়, হারুণ মিনার এমন ঘৃণ্য প্রবৃত্তি আগেও ছিলো। তাই তার কঠোর শাস্তি হওয়া উচিৎ।
আসামীকে বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে আইনের সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিতে তারা কাজ করছে।
এলাকাবাসী জানায় ঘটনাটি গত বুধবার বিকাল ৫টার। খুলনার দিঘলিয়া উপজেলা এক গ্রামের বাড়িতে পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয় প্রথম শ্রেণিতে পড়া ৬ বছরের শিশু। বিস্কুট খাওয়ানোর লোভ তাকে ঘরে ডেকে নেয় বাড়ির মালিক। তখন তার ঘরে পরিবারের অন্য কেউ ছিলো না। ঘরের এই মেঝেতে চালানো হয় নির্যাতন। পরে শিশুটিকে ভয় দেখানো হয় কাউকে কিছু বললে গলা কেটে মেরে ফেলা হবে। এরপর সন্ধ্যায় মেয়েটি ক্রমেই অসুস্থ হয়ে পড়লে জরুরী ভিত্তিতে এ্যাম্বুলেন্সে করে নেওয়া হয় দিঘলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। পরে অবস্থার অবনতি হলে নেওয়া হয় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
ঘটনায় অভিযুক্ত মো. হারুণ মিনাকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী শিশুটির নানী। এর আগে ওই দিনই গণ ধোলাই দিয়ে এলাকাবাসী হারুণ মিনাকে পুলিশে সোপার্দ করে। এলাকাবাসী আরও জানায় এর আগেও হারুণ মিনা অন্যে সাথে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। কিন্তু হাতে নাতে ধরতে না পাড়ায় সে পার পেয়ে যায়। এবার আর সে পালাতে পারেনি।
ভুক্তভোগী শিশুর নানা বলেন, এমন ঘটনায় আমাদের দুশিন্তার অন্তঃ নাই। নানা ভাবে আমাদের ভয় দেখানো হচ্ছে। মামলা করতে না দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে চাপ দেওয়া হয়েছে। গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে মেটানো চেষ্টা করা হয়। তারপরও আমরা সাহস নিয়ে মামলা করেছি। কিন্তু মামলা চালানোর টাকাও আমাদের নাই। তারপরও আমারা আসামীর সর্বোচ্চ সাজা চাই, যাতে করে এমন নিকৃষ্ট কাজ আর কেউ করতে না পারে।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) সমন্বয়কারী ডা. দেবনাথ তালুকদার বলেন, শিশুরটির চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। একই সাথে চলছে পরীক্ষা নিরীক্ষা। শিশুটি সুস্থ হতে সময় লাগবে আরও বেশ কয়েক দিন। আর পরীক্ষা শেষে বলা যাবে তাকে কি ধরনের নির্যাতন করা হয়েছে। তবে শিশুটি শঙ্কামুক্ত বলে জানান তিনি।
খুলান অতিরিক্তি পুলিশ সুপার সুশান্ত সরকার বরেন, ঘটনার পরই আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং থানার প্রক্রিয়া শেষ করে তাকে বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা হাজতে পাঠানো হয়েছে। আইনের সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিতে পুলিশ কাজ করছে বলে জানান তিনি।
জানা যায়, ভুক্তভোগী শিশুটি নানা নানীর কাছে থেকে পড়া লেখা করতো। সে বাগেরহাট জেলার মোংলা উপজেলার দিন মজুর পরিবারের সন্তান।