বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদদের নামে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর নামকরণ হবে বলে জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, স্বৈরাচারমুক্ত বর্তমান পরিস্থিতি তৈরি করতে বিগত ১৭ বছরে বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য বিএনপির বহু নেতাকর্মী আত্মাহুতি দিয়েছেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানেও বহু নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন। তাদের পাশে সহযোগিতার হাত বাড়ানো সবার দায়িত্ব। বিএনপি আগামীতে সরকারে গেলে এ ধরনের পঙ্গু মানুষদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে।
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ সংগঠনের আয়োজনে গণআন্দোলনে পঙ্গুত্ববরণকারী ছাত্র-জনতা ও দুস্থদের মাঝে হুইলচেয়ার বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন। লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, এই মুহূর্তে দেশ স্বৈরাচারমুক্ত। এটি অর্জন করার জন্য সারাদেশের দলমত নির্বিশেষে বহু মানুষ, অনেক রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক দেশপ্রেমিক মানুষ বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আহত হয়েছেন, পঙ্গুত্ববরণ করেছেন। এখন আমাদের কর্তব্য এই মানুষদের পাশে দাঁড়ানো।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আজকে আমরা এখানে হুইলচেয়ার দিচ্ছি। তবে বিজ্ঞান বর্তমানে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতে চাই যে, অদূর ভবিষ্যতে এমন কোনো চিকিৎসা তাদের দিতে সক্ষম হব, যাতে তারা হয়তো আবার আগের মতোই হাঁটতে-চলতে পারবেন, হুইলচেয়ারের প্রয়োজন হবে না।
তিনি আরও বলেন, সারা বাংলাদেশে বহু মানুষ আত্মত্যাগ করেছেন। আমি আহ্বান জানাই, সমাজের প্রত্যেক মানুষ যেন সামর্থ্য অনুযায়ী তাদের সহযোগিতা করার জন্য এগিয়ে আসেন।
তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের মানুষের অধিকার ছিনতাই হয়ে গিয়েছিল স্বৈরাচারের দ্বারা। জনগণের সেই অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য বিএনপি ও তার বিভিন্ন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বহু নেতাকর্মী আত্মাহুতি দিয়েছেন। বহু নেতাকর্মী বিভিন্নভাবে অত্যাচারিত হয়েছেন। সম্প্রতি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জুলাই-আগস্ট মাসেও বহু মানুষ আত্মাহুতি দিয়েছেন, হতাহত হয়েছেন। ভবিষ্যতে জনগণের সমর্থন নিয়ে বিএনপি সরকার গঠনে সক্ষম হলে বিভিন্ন এলাকায় রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এসব শহীদের নামে তৈরি করা হবে। এ মানুষদের নাম যাতে হারিয়ে না যায়, সেই ইচ্ছা আমাদের রয়েছে।
অনুষ্ঠানে ১০ পঙ্গু ব্যক্তিকে আধুনিক হুইলচেয়ার বিতরণ করা হয়। আগামীতে সারাদেশে আরও হুইলচেয়ার বিতরণ করা হবে বলেও সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়। তারেক রহমানের বক্তব্যের আগে পঙ্গুত্ব বরণকারী দু’জন তাদের পঙ্গু হওয়ার বর্ণনা দেন। এ সময়ে অনলাইনে থাকা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানসহ উপস্থিত নেতাকর্মীর চোখে পানি চলে আসে। অনেককে চোখ মুছতে দেখা যায়।
আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জামান মিল্লাত, চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল, কেন্দ্রীয় নেতা আশরাফ উদ্দিন বকুল, মাহমুদুর রহমান সুমন, ড. এম এ মুহিত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।