ছোটপর্দার শিল্পীদের সংগঠন অভিনয়শিল্পী সংঘ। সদস্য সংখ্যা ছয় শতাধিক। সম্প্রতি সরকার পতনের পর এই সংগঠনেও বিভাজন সৃষ্টি হয়। সংগঠনটির নেতাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে শিল্পী সংঘ সংস্কার ও বর্তমান কমিটির পদত্যাগ দাবিও করে শতাধিক অভিনয়শিল্পী। অবশেষে সেই দাবির বিপরীতে শান্তিপূর্ণ সুরাহায় গড়ালো সংঘ। বর্তমান কমিটিকে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেয়া থেকে বিরত রেখে অন্তর্বর্তীকালীন সংস্কার কমিটি গঠন করা হয়েছে। যার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালক করবেন অভিনেতা তারিক আনাম খানকে।
১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মহাখালিতে সংঘের বর্তমান কমিটি ডাক দেয় সাধারণ সভার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তারিক আনাম খান। সাধারণ সভার আগের সংবাদিকদের মুখোমুখি হয় তিনি।সে সময় শিল্পীদের রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার বিষয় নিয়ে কথা বলেন তারিক আনাম খান। বলেন, ‘কোনো শিল্পী রাজনীতিবিদ হবেন কিনা সেটা বলব না। কিন্তু কোনো শিল্পকর্মই রাজনীতির বাইরে না বলে আমি মনে করি। তবে রাজনীতির সঙ্গে নাটক, শিল্প-সাহিত্য হয় না। এক্ষেত্রে সময়ের একটি বিষয় থাকে। সুতরাং আমি যদি মানুষের কথা বলি, সমাজের মুক্তি চাই অথবা আমি যদি মানুষের ভালো চাই তাহলে রাজনীতিহীন হওয়াটা খুব মুশকিল। যদি কেউ রাজনীতি করে করুক। সে ক্ষেত্রে আমরা তো কাউকে মানা করিনি। এর আগেও তো আমরা অনেককে দেখেছি। কিন্তু সেটার প্রভাব যেনো আমাদের শিল্পী সংঘের ওপর প্রভাব না ফেলে।’
গত দুই মাসে রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রভাব ফেলেছে নাটক সিনেমার উপরও। এমন পরিস্থিতিতে নাটক কিংবা সিনেমা মুক্তি দিতে ভয় পাচ্ছেন প্রযোজকরা। তবে আশার দিক হল পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে। এখন সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার কথাও জানালেন তারিক আনাম।তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি রাজনৈতিক পরিবর্তনের ফলে আমাদের নাটক, সিনেমা এবং ওটিটি একটা বন্ধ্যত্ব অবস্থার মধ্যে পড়ে আছে। আমাদের অনেক শিল্পী-টেকনিশিয়ান আছেন যারা দিনের আয়ের উপর দিয়ে তাদের সংসার চালান। তাদের অবস্থা কিন্তু ধীরে ধীরে ভয়াবহতার দিকে যাচ্ছে। এটা আমার জন্য কষ্টের। এখন আমাদের আলোচনা করে একটি সিদ্ধান্তে আসতে চাই। কীভাবে এটা সংস্কার করে দ্রুত ভালোর দিকে আনা যায়। এ ক্ষেত্রে বিভাজন নয় বরং সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’
শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন নতুন সরকার এসেছে। এক্ষেত্রে কর্মস্থলে কতটা স্বাধীনতা ফিরেছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তারিক আনাম খান বলেন, ‘সবে তো শুরু হল। আমি চাই যারা নতুনভাবে বংলাদেশ দেখছেন তারা এটা মনে রাখবেন শিল্প-স্বাধীনতা বড় স্বাধীনতা। আজকে ওটিটি কিংবা ইউটিউবের কল্যাণে আমাদের নটক কিন্তু বিশ্বব্যাপী চলছে। আমি আজ পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন নই। তাহলে কেন আমাদের শিল্পীরা হলিউড-ইরানে যাবে না। কাজের এই জায়টা তৈরি করা প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। এসব মাথায় নিয়ে পরিবর্তনের জন্য এগিয়ে যেতে চাই।’