ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের উত্তর গাজার শেষ হাসপাতালটির কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে গেছে। সেখানকার সর্বশেষ বড় স্বাস্থ্য স্থাপনা কামাল আদওয়ান হাসপাতালটিতে শুক্রবার আগুন ধরিয়ে দেয় ইসরায়েলি বাহিনী।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদের নামে ওই হাসপাতালের পরিচালক হুসাম আবু সাফিয়াসহ বেশ কয়েকজন কর্মীকে আটক করা হয়েছে। তাদের একটি তদন্তকেন্দ্রে নিয়ে গেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েলি সেনারা জোর করে হাসাপাতালের চিকিৎসা সুবিধা বন্ধ করে দেয়। এতে অনেক রোগী স্বাস্থ্য সংকটে পড়েছে।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও (ডব্লিউএইচও) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে সংস্থাটি জানিয়েছে, ‘ইসরায়েলি অভিযানে কামাল আদওয়ান হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। হাসপাতালের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ মারাত্মকভাবে পুড়ে গেছে।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী উত্তর গাজার সর্বশেষ পরিচালিত হাসপাতালটিতে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। হাসপাতালের অপারেটিং রুম ও জরুরি বিভাগ ধ্বংস হয়ে গেছে। হাসপাতালের সকল রোগী ও কর্মীসহ আনুমানিক ৩৫০ জনকে সরিয়ে নিতে বাধ্য করা হয়েছে। এতে গাজার উত্তর অঞ্চলের প্রধান চিকিৎসা কেন্দ্রটির সব চিকিৎসা সুবিধা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
হাসপাতালের একটি সূত্রের বরাতে আল জাজিরা বলছে, ইসরায়েলি বাহিনী হাসপাতালের চিকিৎসা সুবিধার বিভিন্ন অংশে আগুন দেওয়ায় হাসপাতালের অন্তত পাঁচজন কর্মী পুড়ে মারা গেছেন।
শুক্রবার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা উত্তর গাজার হাসপাতাল ও আশেপাশে অভিযান পরিচালনা করছে। কারণ হিসেবে বলেছে, হামাস শক্তিশালী ঘাঁটি হিসাবে হাসপাতালটিকে ব্যবহার করছে।
কামাল আদওয়ান হাসপাতালে অভিযানের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে সৌদি আরব ও জর্ডান। দেশ দুটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এ ধরনের অভিযান আন্তর্জাতিক আইনের সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন।
প্রসঙ্গত, এর আগে উত্তর গাজার বেইত লাহিয়া এলাকার কামাল আদওয়ান হাসপাতালে অভিযান চালানোর কথা জানায় ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। তাদের দাবি, হাসপাতালটির হামাসের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল। এ অভিযোগ অস্বীকার করে হাসপাতাল পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাকে ‘সুস্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ’ বলে মন্তব্য করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস।