ইউক্রেন যুদ্ধের উদাহরণ টেনে এনে প্রতিরক্ষা খাতে স্বনির্ভর হওয়ার বার্তা দিলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং।
৩৭তম এয়ার চিফ মার্শাল পিসি লাল স্মারক বক্তৃতা রাখার সময় বৃহস্পতিবার রাজনাথ সিং বলেন, “আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা আমাদের শিখিয়েছে যে ভারত আমদানির উপর নির্ভর করে থাকতে পারে না। সাম্প্রতিক সংঘাত, বিশেষ করে ইউক্রেনের পরিস্থিতি আমাদের দেখিয়েছে যে শুধু প্রতিরক্ষা সরবরাহ নয়, এই ধরনের পরিস্থিতিতে জাতীয় স্বার্থের ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক চুক্তিগুলোও প্রভাবিত হতে পারে।”
অনুষ্ঠানে ভারতীয় বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল ভিআর চৌধুরী, এয়ার ফোর্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এয়ার চিফ মার্শাল আরকেএস ভাদৌরিয়া (অবসরপ্রাপ্ত) এবং বিমান বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে রাজনাথ এমন এক সময়ে এই মন্তব্য করলেন যখন ইউক্রেনের যুদ্ধের আবহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশ রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে এবং এর জেরে ভারত-রাশিয়া প্রতিরক্ষা সম্পর্কে নতুন করে জটিলতা দেখা দিয়েছে। আর তাই কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হচ্ছে ভারতকে। এই পরিস্থিতিতে আমদানি করা সামরিক হার্ডওয়্যারের উপর নির্ভরতা কমাতে ভারত নতুন জরুরি পদক্ষেপ নিচ্ছে। যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে এই পদক্ষেপ ভারতের পক্ষে অত্যন্ত জরুরি।
ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে নয়া সামরিক প্রকল্পগুলো প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তাছাড়া ইতোমধ্যেই ভারত বিগত কয়েক দশক ধরে রাশিয়া থেকে যে সামরিক সরঞ্জাম কিনেছে, তার যন্ত্রাংশ কেনার ক্ষেত্রেও জটিলতা তৈরি হয়েছে। এই আবহে আত্মনির্ভরতা ছাড়া পথ নেই ভারতের কাছে। অবশ্য, ভারত বিগত পাঁচ বছর ধরেই প্রতিরক্ষা খাতে আত্মনির্ভর হওয়ার কথা ভাবছে এবং সেই সংক্রান্ত বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
এই পরিস্থিতিতে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রতিরক্ষা খাতে স্বনির্ভরতা বাড়াতে সরকার যে পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করেছে, তাতে দেশীয় নির্মাতাদের ক্ষমতায়ন হবে এবং ভারতকে সামরিক হার্ডওয়্যার রফতানিকারক হিসেবে উঠে আসবে। আত্মনির্ভরশীলতার পথে পা বাড়াতে ভারত গত দুই বছরে ৩১০টি বিভিন্ন অস্ত্র ও সিস্টেম আমদানির উপর পর্যায়ক্রমে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং দেশীয় নির্মাতাদের কাছ থেকে সামরিক হার্ডওয়্যার কেনার জন্য প্রতিরক্ষা বাজেটে তহবিলও বরাদ্দ করেছে।
এই আবহে রাজনাথ থিয়েটারাইজেশনের প্রসঙ্গটিও তোলেন। তিনি অনুষ্ঠানে বলেন, “সশস্ত্র বাহিনীর একীকরণের চলমান প্রক্রিয়ার লক্ষ্য শুধু সম্মিলিত সক্ষমতাই নয়, দক্ষতা বৃদ্ধি করাও বটে। পরিকল্পিত পরিবর্তনগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সংস্কার বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত এই পরামর্শমূলক প্রক্রিয়া চলবে।” সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
পি এস/এন আই