ইউক্রেনে ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির সুমি অঞ্চলের একটি আবাসিক ভবনে চালানো এই হামলায় নিহত হয়েছেন ১০ জন।নিহতদের মধ্যে দুই শিশুও রয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অর্ধশতাধিক মানুষ। এছাড়া অন্য একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অঞ্চলটির প্রধান শহর ও প্রশাসনিক কেন্দ্র বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে।রোববার (১৮ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর সুমিতে একটি আবাসিক ভবনে রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে দুই শিশুসহ ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার গভীর রাতে শহরের ৯ তলা বিল্ডিংয়ে রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে।হামলায় আট শিশুসহ আরও ৫৫ জন আহত হয়েছেন বলে সুমির সিটি কাউন্সিল টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে জানিয়েছে।সুমি সামরিক প্রশাসনের প্রধান ভলোদিমির আর্টিউখ প্রশাসনের টেলিগ্রাম বার্তা চ্যানেলে দেওয়া এক পোস্টে বলেছেন, “রোববার সন্ধ্যা সুমি শহরের জন্য নরকে পরিণত হয়েছিল, রাশিয়া আমাদের এই ভূমিতে ট্র্যাজেডি নিয়ে এসেছে।”সামরিক প্রশাসন বলেছে, রাশিয়ার নিক্ষেপ করা আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্র গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে আঘাত করেছে, যার ফলে শহরটি বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে।এদিকে উদ্ধারকারীরা এবং প্রয়োজনীয় পরিষেবার সদস্যরা ঘটনাস্থলে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে এবং মনোবিজ্ঞানীরা ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা প্রদান করছেন বলে ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় জরুরি পরিষেবা টেলিগ্রামে বলেছে। ৪০০ জনেরও বেশি লোককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও তারা জানিয়েছে।ইউক্রেনের স্টেট ইমার্জেন্সি সার্ভিসের টেলিগ্রামে পোস্ট করা ছবিতে দেখা গেছে, অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে লড়াই করছে এবং উদ্ধারকারীরা একটি ভবন থেকে লোকদের নিয়ে যাচ্ছে। অন্য একটি ছবিতে দেখা গেছে একটি বহুতল ভবনের প্রায় সব জানালা উড়ে গেছে এবং এর সম্মুখভাগও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।রাশিয়ার কাছ থেকে অবশ্য এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সর্বাত্মক হামলা শুরু করে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। এরপর থেকে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে প্রায় ১২ হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। আড়াই বছর ধরে চলা এই যুদ্ধে ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝিয়া— চারটি প্রদেশের আংশিক দখল নিয়েছে রুশ বাহিনী।এই চার প্রদেশের রাশিয়ার দখলে যাওয়া অংশের সম্মিলিত আয়তন ইউক্রেনের মোট ভূখণ্ডের এক-পঞ্চমাংশ। এছাড়া গত শুক্রবার রাশিয়ান বাহিনী পূর্বাঞ্চলের রণাঙ্গনেও অগ্রগতি অর্জন করেছে।
Leave a comment