মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্র্যাট শিবির থেকে ফের নির্বাচিত হলেন দুই মুসলিম নারী। তারা হলেন– ফিলিস্তিন বংশোদ্ভূত রাশিদা তালিব ও সোমালীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান নাগরিক ইলহান উমর। কংগ্রেসের প্রথম ফিলিস্তিনি ও শরণার্থী মুসলিম নারী হিসেবে তারা এতদিন দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে টানা চতুর্থবারের মতো জয়ী হলেন দেশটির আইনসভার একমাত্র ফিলিস্তিনি-মার্কিন সদস্য রাশিদা তায়েব। মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ১২তম কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট থেকে জিতেছেন তিনি। অন্যদিকে, টানা তৃতীয়বারের মতো মিনেসোটার পঞ্চম ডিস্ট্রিক্ট থেকে নির্বাচিত হলেন ইলহান।
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তার কঠোর সমালোচক রাশিদা। সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল ইস্যুতে তাঁর অবস্থানের জন্য সমর্থন দিতেও অস্বীকৃতি জানান তিনি। রাশিদা যে ডিস্ট্রিক্ট থেকে জিতেছেন, সেখানে বড় সংখ্যক আরব-মার্কিন জনগোষ্ঠীর বসবাস। ফিলিস্তিনের গাজায় স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধের ঘোর বিরোধী তিনি। তাঁর অভিযোগ, গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল। তবে রাশিদা তায়েবের বিভিন্ন সময়ে করা মন্তব্যে তাঁর প্রতিনিধি পরিষদের অনেক সহকর্মীই ক্ষুব্ধ হন। গত বছর রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত এ পরিষদ ইসরায়েল হামাস যুদ্ধ নিয়ে রাশিদার মন্তব্যের নিন্দা জানিয়ে ভোট দেয়। রাশিদা বলেন, তাঁর সমালোচনা ছিল ইসরায়েলের সরকার ও প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে তিনি অঙ্গীকার করেন, ইসরায়েলি আগ্রাসন নিয়ে তিনি চুপ থাকবেন না।
অন্যদিকে ইলহানও গাজায় ইসরায়েলি যুদ্ধের একজন কড়া সমালোচক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করা একটি পোস্টে জয়ের জন্য সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইলহান। তিনি লিখেছেন, আমাদের কঠোর পরিশ্রম সার্থক হয়েছে। আমরা ১ লাখ ১৭ হাজার ৭১৬টি দরজায় কড়া নেড়েছি। আমরা ১ লাখ ৮ হাজার ২২৬টি ফোনকল করেছি এবং ১ লাখ ৪৭ হাজর ৩২৩টি বার্তা পাঠিয়েছি। এই বিজয় যারা সুন্দর ভবিষ্যতের সম্ভাবনায় আস্থা রেখেছে তাদের সবার।
ইলহান ও রাশিদা উভয়েই ডেমোক্র্যাট পার্টির প্রগতিশীল গ্রুপ ‘দ্য স্কোয়াড’-এর সদস্য। এই গ্রুপে জামাল ব্যোম্যান, অ্যালেক্সেন্ড্রা ওকাসিও-কোর্টেজসহ আরও অনেকেই রয়েছেন। তবে এই গ্রুপ থেকে ইলহান ও রাশিদা নির্বাচিত হলেও গ্রুপের অপর দুই সদস্য জামাল ব্যোম্যান ও কোরি বুশ নিজ নিজ দলের প্রাথমিক নির্বাচনেই পরাজিত হন। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীরা ইসরায়েলপন্থি সংগঠন আমেরিকান-ইসরায়েল পাবলিক অ্যাফেয়ার্সের (এআইপিএসি) সদস্য। সংগঠনটি মার্কিন নির্বাচনে ফিলিস্তিনপন্থিদের অবদমনে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। খবর এপির।