দেশের সব হাসপাতালের বহির্বিভাগ (আউটডোর) এবং চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বার আজ (১১ মার্চ) সকাল ৯টা থেকে বন্ধ থাকবে। এই সময়ের মধ্যে রোগীদের কোনো সেবা প্রদান করবেন না চিকিৎসকরা। এটি পাঁচ দফা দাবি আদায়ের অংশ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, যা পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত চলতে থাকবে।
এছাড়াও, হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের সব অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম (ক্লাস ও পরীক্ষা) বন্ধ থাকবে। গতকাল (১০ মার্চ) পাঁচ দফা দাবি নিয়ে এক বিশেষ ঘোষণা দেয় জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটি।
‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহারের উপর রিটের রায় ঘোষণার পর থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা নতুন কর্মসূচি পালন করছেন। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসকরা। তারা নির্দিষ্ট সময় ধরে কর্মবিরতি পালন করছেন এবং মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করছেন। ১২ মার্চ এই রায় ঘোষণার দিন, কর্মসূচি আরও তীব্র হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে তারা।
চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা বিশেষ ঘোষণায় বলেছেন, তারা দ্রুত প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান। তারা আরও জানান, যদি তারা ন্যায়বিচার না পান, তাহলে ডাক্তার সমাজ তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলবে এবং কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবে, যার দায় সরকারকে নিতে হবে।
বিশেষ ঘোষণায় বলা হয়েছে, আজ (১১ মার্চ) সকাল ৯টা থেকে অ্যাকাডেমিক শাটডাউন কার্যকর হবে এবং শিক্ষার্থীরা ওয়ার্ড ও ক্লাস থেকে বের হয়ে বিক্ষোভে অংশ নেবেন। একই সঙ্গে, সব চিকিৎসক (ইন্টার্ন থেকে প্রফেসর পর্যন্ত) কর্মবিরতিতে যাবেন, আউটডোর বন্ধ থাকবে এবং ব্যক্তিগত চেম্বারও বন্ধ থাকবে।
এছাড়া, ১২ মার্চ, রায় ঘোষণার দিন, চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীরা একযোগে ‘ঢাকা চল’ মহাসমাবেশে যোগ দেবেন বলে ঘোষণায় জানানো হয়।
চিকিৎসকদের পাঁচ দফা দাবি—
১. এমবিবিএস/বিডিএস ডিগ্রিপ্রাপ্তরা ছাড়া অন্য কেউ ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার করতে পারবে না এবং আদালতে চলমান জনস্বাস্থ্যবিরোধী সব রিট নিষ্পত্তি করতে হবে।
২. ‘রেজিস্টার্ড চিকিৎসক (এমবিবিএস/বিডিএস) ছাড়া অন্য কেউ প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারবে না’।
৩. মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট কোর্সের কারিকুলাম সংস্কার এবং মানহীন ম্যাটস (মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল) বন্ধ করতে হবে।
৪. জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে চিকিৎসকের শূন্যপদ পূর্ণ করতে হবে এবং বিসিএস বয়সসীমা ৩৪ বছরে উন্নীত করতে হবে।
৫. চিকিৎসক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং বেসরকারি চিকিৎসকদের জন্য নির্দিষ্ট বেতন কাঠামো (পে-স্কেল) তৈরি করতে হবে।
এই কর্মসূচি পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত চলবে বলে জানানো হয়েছে।