রবিবার ভোর ৫টা ৫২ মিনিট। একটি অ্যাম্বুলেন্স সাইরেন বাজিয়ে প্রবেশ করল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। অ্যাম্বুলেন্স দেখেই গণমাধ্যমকর্মী, স্বেচ্ছাসেবক ও উৎসুখ জনতা এগিয়ে গেলেন। কারণ একটি অ্যাম্বুলেন্স আসা মানেই একটি মরদেহ কিংবা একজন দগ্ধ রোগী আসা।
এভাবে শনিবার রাত ১১টা থেকে একটির পর একটি অ্যাম্বুলেন্স আসতে থাকে। চমেক হাসপাতালের আশপাশে রাতভর কেবলই শোনা গেল অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন। রাত যত গভীর হয় অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যাও তত বাড়তে থাকে। ক্রমেই চট্টগ্রাম শহরটি অ্যাম্বুলেন্সের শহরে পরিণত হয়।
সরেজমিন দেখা যায়, শনিবার দিবাগত রাত যখন ৩টা ৬ মিনিট, তখন এক সঙ্গে ১০টি অ্যাম্বুলেন্স আহত রোগী নিয়ে হাসপাতালে প্রবেশ করে। তখন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তৈরি হয় এক হৃদয়বিদারক পরিবেশ। স্বজনের কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে গভীর রাতের নীরব আকাশও। রবিবার ভোর ৪টা ৬ মিনিটেও এক সঙ্গে আনা হয় দুটি মরদেহ। এভাবে রাতভর অ্যাম্বুলেন্স আসতে থাকে রোগী ও মরদেহ নিয়ে। কিছুক্ষণ পরপর অ্যাম্বুলেন্সের বহর ঢুকতেছে চমেক হাসপাতালে। তখন দেখা যায়, কারো পা নেই, কারো হাত নেই, কারো শরীর থেকে দগ্ধ চামড়া ঝুলে আছে। আবার কারো পেটের নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে গেছে।
জানা যায়, চট্টগ্রামে সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে শনিবার রাত ১১টার দিকে ভয়াবহ আগুনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ জন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তিন শতাধিক মানুষ।
ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় রাসায়নিক দ্রব্য বিস্ফোরণের কারণে বারবার বিস্ফোরিত হচ্ছে কনটেইনার। আগুনের তীব্রতার কারণে কাছেও ঘেঁষতে পারছে না ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। পানি স্বল্পতার কারণে গত ৮ ঘণ্টারও বেশি সময়েও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি ফায়ার সার্ভিসের ২৪টি ইউনিট।
পি এস/এন আই