প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখা শেষ করে ইতোমধ্যেই হয়ত অনেকে আগ্রহের বিষয়ে কাজ করছেন। এখন নতুন করে পছন্দের বিষয়ে দেশের বাইরে থেকে আরও উচ্চতর শিক্ষা নেওয়া কি যায়?
অস্ট্রেলিয়াতে টিউশন ফি, চলার খরচ মিলিয়ে খরচ তো অনেক বেশি পড়ে যাবে। এক্ষেত্রে স্কলারশিপ কি পাওয়া সম্ভব?এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী ‘অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা: কমপ্লিট গাইড’ বইয়ের লেখক জসীম উদ্দিন রাসেল।সম্প্রতি স্নাতক শেষ করে থাকলে যে বিষয়ে পড়তে চান সে বিষয়ে পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠানে আবেদন করা যায়।
কোনো সময় দেখা যায়, প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখা শেষ হয়েছে অনেক আগেই। এক্ষেত্রে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই।যে বিষয়ে পড়তে যেতে চান যদি সেই বিষয়ের ওপরেই কাজ করে থাকেন তাহলে সেটার প্রমাণ দিলেই হবে। তবে আবেদন করার আগে কিছু তথ্য সংগ্রহ করে নিন।অস্ট্রেলিয়ার কোনো শহরে যেতে চাচ্ছেন এবং সেখানে পছন্দের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠান আছে কি-না? যদি থাকে তাহলে সেটার তালিকা করুন। এরপর দেখুন সেখানে পড়তে মোট কত টিউশন ফি দিতে হবে এবং থাকা-খাওয়া বাবদ কত খরচ পড়বে।
এগুলো যখন হিসাব করা হয়ে যাবে তারপর জানুন, ইংলিশ টেস্ট-এ স্কোর কত লাগবে এবং ব্যাংক ব্যালেন্স কত দেখাতে হবে।ব্যাংক ব্যালেন্স দেখানোর মতো পর্যাপ্ত টাকা আছে কি-না এবং অস্ট্রেলিয়াতে টিউশন ফি ও থাকা-খাওয়া বাবদ অর্থ সমন্বয় করতে পারবেন কি-না? এসব প্রশ্নের উত্তরও ভালোভাবে ভেবে দেখুন।
তবে যদি নিজের বা পরিবারের কাছ থেকে টাকা না নিয়ে পড়তে চান তাহলে স্কলারশিপ বা বৃত্তির ব্যবস্থাও রয়েছে।সেজন্য জানতে হবে কারা স্কলারশিপ দিয়ে থাকে এবং এজন্য আপনার কী ধরনের যোগ্যতার প্রয়োজন হবে।রিসার্চ ট্রেইনিং প্রোগ্রাম (Research Training Program (RTP), ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ স্কলারশিপ (International Research Scholarship), অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ড স্কলারশিপ (Australia Awards Scholarship) এই তিনটা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন বিষয়ের ওপর আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিয়ে থাকে।
এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠানও বৃত্তি দেয়। তাদের ওয়েবসাইট গিয়ে বিস্তারিত জেনে আবেদন করা যায়।তবে কোনো সংস্কৃতি-বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ‘অস্ট্রেলিয়ান ইন্সটিটিউট অফ মিউজক’ বা ‘অস্ট্রেলিয়ান এলিজাবেথ থিয়েটার ট্রাস্ট’য়েও খোঁজ নিতে পারেন।সংগীত, চলচ্চিত্র, আলোকচিত্র, থিয়েটার, নাটক, নৃত্য, ফ্যাশন ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে এসব প্রতিষ্ঠান স্কলারশিপ দিয়ে থাকে।যাবতীয় তথ্য তাদের ওয়েবসাইট থেকে জানা যাবে।তবে আগে থেকেই আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। যেমন- যারা ২০২৫ সালে পড়তে যেতে চান তাদের আবেদন প্রক্রিয়া ২০২৪ সালেই শেষ হয়ে গেছে।
তাই ২০২৫ সালের শুরুতে আবেদন করলে ২০২৬ সালে পড়তে যেতে পারবেন।আবেদন করার আগে অবশ্যই আবেদন প্রক্রিয়া এবং কী কী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দরকার পড়বে সেটা জেনে নিন আর সংগ্রহ করুন।যেমন- ‘অস্ট্রেলিয়ান ইন্সটিটিউট অফ মিউজিক’য়ে (Australian Institute of Music) বৃত্তির জন্য আবেদন করতে হলে ‘কভার লেটার’, মিউজিক নিয়ে আপনার জীবনের বা ‘ক্যারিয়ার’য়ের পরিকল্পনা এবং অ্যাকাডেমিক বা পেশাদার দুজনের কাছ থেকে ‘রেফারেন্স লেটার’ বা সুপারিশপত্র সংগ্রহ করে জমা দিতে হবে।যখন এই গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করবেন তখন সময় নিয়ে যত্ন করে লিখুন। তাহলে স্কলারশিপ পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল- যখন আবেদন করবেন তখন তাদের শর্তাগুলো ভালোভাবে দেখে নিতে হবে।যেমন- কিছু বৃত্তির সাথে শর্ত থাকে যে, পড়া শেষ করে দেশে ফিরতে হবে। আপনি যদি পড়া শেষে অস্ট্রেলিয়াতে থেকে যেতে চান তাহলে যত টাকা বৃত্তি হিসেবে পেয়েছেন, সেটা তাদেরকে ফেরত দিতে হবে।যদি পড়া শেষে অস্ট্রেলিয়ায় থেকে যেতে চান তাহলে যেখানে এই ধরনের কোনো শর্ত থাকবে না সেখানে আবেদন করতে হবে।